হিজাব পড়ে একজন ব্রাজিলিয়ান মুসলিম নারীর ফুটবল অনুশীলন |
সকাল, সকাল ফারুকী ভাইয়ের টাইমলাইনে জনাব শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের একটি ভিডিও
দেখলাম (https://www.youtube.com/watch?v=Nz9am0OCagg)। ভিডিওটি দেখে আমার
ভীষণ হাসির উদ্রেক হলো এবং তার সাথে, সাথে অনেক বিরক্তও
হলাম। উনি এই দেশের যুবকদের
ব্রাজিলকে সাপোর্ট করতে নিষেধ করেছেন কারন ব্রাজিল নন-মুসলিম। উনি এই দেশের যুবকদের মূর্খ বলে সম্বোধন করেন
এবং ব্রাজিলের বিরুদ্ধে অনেক আজেবাজে কথা বললেন।
আসল মূর্খটা কে একটু পরেই আমরা জানতে পারবো।
জনাব শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ,
ব্রাজিলে ইসলাম এবং মুসলমান সম্পর্কে একটু জেনে নিয়ে কথা গুলো
বললে ভালো হতো না?
২০১০ সালের সেনসাস অনুযায়ী, ব্রাজিলের বর্তমান মুসলমানদের সংখ্যা ছিলো ৩৫, ১৬৭। আবার 30-days.net নামক একটি ওয়েবসাইটের
মতে, বর্তমানে ব্রাজিলে সর্বমোট ১০০, ০০০ মুসলমান আছে। Washington Times এর মতে ২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলে মুসলমানদের
সংখ্যা ২৯.১% হারে ব্ৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্রাজিলের মুসলমান ভাইবোনেরা বেশীরভাগই সাও
পাওলো এবং পারানাতে বসবাস করে। খুব কম সংখ্যক ব্রাজিলিয়ান মুসলমানেরা সান্তোস বন্দর,
পারানা এবং কুরিটিবা সমুদ্র সৈকত এবং ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-প্যারাগুয়ে
বর্ডারের কাছে ফওজ ডি ইগুয়াজুতে অবস্থান করছে।
ব্রাজিলের মুসলমানেরা বেশীরভাগি সুন্নি। বর্তমানে ব্রাজিলে
ইসলাম খুবই জনপ্রিয় একটি ধর্ম। বিগত ত্রিশ বছরে ব্রাজিলে ইসলামের প্রসার লক্ষণীয়। মুসলিম কমিউনিটির সূত্র
মতে, বর্তমানে ব্রাজিলে ১০, ০০০ কনভার্টেড মুসলিম আছে। ব্রাজিলের মুসলমানেরা শুশিক্ষা অর্জনে বদ্ধপরিকর। আর তাই, মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি, স্কুল, গ্রন্থাগার, শিল্প চর্চার কেন্দ্র নির্মাণ করেছে এবং নিজস্ব একটি পত্রিকাও তারা চালাচ্ছে। ব্রাজিলের কাম্পিনাসে
একটি ইসলামিক সেন্টারও গড়ে তোলা হয়েছে।
শুনলে আশ্চর্য হবেন যে, ব্রাজিলের মুসলিম নারীরা হিজাব পড়ে ফুটবল খেলে এবং শিক্ষাদীক্ষায়
তারা অনক অগ্রসর।
১৯৫০ সাল ইসমাইল হাইতা নামক একজন দক্ষিন আফ্রিকান
কাম্পিনাসে একটি মসজিদ নিমান করেন। তাছাড়া কুইবাইয়া এবং ফওজ ডি ইগুয়াজুতেও মসজিদ আছে। প্রতি শুক্রবারে এই
মসজিদ গুলোতে জুম’আ এর নামাজ আদায়ের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমানদের সমাবেশ
ঘটে।
ভুলে যাবেন না যে, ব্রাজিল সরকার আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে তৈরি করা ব্যাঙ্গাত্মক
সিনেমা “Innocence of Muslims” নিষিদ্ধ করছেন। ৯/১১ এর পরবর্তী সময়
গুলোতে বেশীরভাগ নন-মুসলিম দেশ গুলো যেখানে মুসলমানদের নির্যাতনে ব্যস্ত ছিলো,
সেই অস্থির সময় গুলোতে ব্রাজিল সরকার তার দেশের মুসলমান জনগনদের
পাশে বন্ধুর মতো দড়িয়েছিলেন।
জনাব শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেব,
কেন মানুষের মধ্যে ঘৃণা ছড়ান? ইসলাম কখনও ঘৃণা করার শিক্ষা দেয় না। এই চিপ ধর্ম ব্যাবসা করে ইসলামকে কেন অপমান করছেন আপনারা?
আসল মূর্খটা কে একটু নিজকে জিজ্ঞেস করুন না?
একদিকে চেতনা আর আরেক দিকে ধর্ম ব্যাবসা!
এই দেশের মানুষ যাবে কই?
ধন্যবাদ
ফয়সাল
সিজার
No comments:
Post a Comment