১) “এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে শুরু হওয়া বাংলাদেশ
দলের অনুশীলন ক্যাম্পে হঠাৎ ডাক পেয়েছেন বাংলাদেশ দলের লেগ স্পিনার। কাল রাতেই
তাঁর খুলনায় রওনা হওয়ার কথা ছিল”।
খবরটা পড়ে ভালো লাগলো। মূল দলে জায়গা পাবে কিনা সন্দেহ আছে। কারন
টি২০ ফরম্যাটে লেগস্পিনারদেরকে কেউ খেলাতে চায়না। কারন, এখানে বলে
লেগিদের বেশী রান দেবার রিস্ক আছে। শেন
ওয়ার্ন কিন্তু দেখিয়ে দিয়ে গেছেন যে টি২০-তে ও লেগিরা বেশ কার্যকর। এখন
আপনি বলতে পারেন, লিখন তো আর ওয়ার্ন নয়।
হ্যাঁ সেটা সত্য কিন্তু কাউকে নিয়মিত খেলার সুযোগ না দিলে সে নিজেকে প্রমান করবে
কিভাবে? আমি আবারও বলছি, যে কোন দলের জন্য লেগস্পিনার হলো এসেট।
২) “এনামুলের কাছে জুবায়ের
জানতে চাইলেন, তাঁকেও কিছু বলা হয়েছে কি না। দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল এনামুলের। শুকনো
মুখে শুধু বললেন, ‘না রে...”
এনামুল হক বিজয় হঠাৎ করেই অনেকটা নিঃসঙ্গ হয়ে গেছেন। এবারের এশিয়া
কাপ এবং টি২০ বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে তার জায়গা হয়নি। অথচ, গত এশিয়া কাপে
এই এনামুলই ৪ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিতে ৫৬.৭৫ গড়ে ২২৭ রান করেছিলেন। গত নভেম্বরে সফরকারী
জিম্বাবুয়ের সাথে তার ব্যাট তেমন কথা বলেনি এবং “জাতীয় দল থেকে বাদ
পড়া, তাঁর
টেকনিক ও খেলার ধরন নিয়ে নানা প্রশ্ন, কুষ্টিয়ায় এক যুবককে পিটিয়ে আহত করার
অভিযোগ, সর্বশেষ বোর্ডের চুক্তি থেকে নাম কাটা যাওয়া” একসাথে এত
নেগেটিভ ব্যাপার গুলো এনামুলকে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত করে রেখেছে।
এনামুলের টেকনিক নিয়ে সবাই পূর্বে অনেক প্রশ্ন তুলেছে এবং এখনও তুলে।
হ্যাঁ, এনামুলের
মূল সমস্যাটা হলো দুর্বল ফুটওয়ার্ক এবং অফস্ট্যাম্প লাইনে পড়ে ব্যাটকে ছেড়ে বাইরের
দিকে চলে যাওয়া বলে দুর্বলতা। এই দুর্বলতা কিছুটা, মহামারি আকারের
নয়।
কিন্তু এই দুটো ব্যাপারে বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটে কোন ব্যাটসম্যানটা
পারফেক্ট? বর্তমানে বিশ্বে কি কেন উইলিয়ামসন ছাড়া টেকনিক্যালি পারফেক্ট
ব্যাটসম্যান আছে?
জো রুটের কথা মাথায় আসছে, ঐদিকে এলেস্টার কুক এবং হাশিম আমলা
আছেন। রাহানে আস্তে, আস্তে টেকনিক্যালি একজন ভালো ব্যাটসম্যান হয়ে উঠছেন। কিন্তু তারপরও
টেকনিকে কিছু এদিক-সেদিক আছে। তবে, এদের সবার চেয়ে শুধু একজনই এগিয়ে আছেন
এবং তিনি হলেন নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন। হ্যাঁ, তাকে
টেকনিক্যালি পারফেক্ট বলা যায়।
ঐ টেকনিকে দুর্বলতা স্টিভ স্মিথ এবং কোহেলীর ও আছে।
যাই হোক, বাংলাদেশ দলে টিকে থাকাটা এখন অনেক কঠিন। দলে
টিকে থাকার প্রতিযোগিতাটা বেশ শক্ত। কারও ফর্মে ভাঁটা আসলেই তার জায়গা নেবার জন্য
অনেক খেলোয়াড়ই এখন আছেন। দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে এনামুলের হতাশ হবার কিছুই নেই।
ক্যারিয়ারে খারাপ সময় আসতেই পারে কিন্তু সেটা যেন দীর্ঘায়িত না হয় সেদিকে লক্ষ্য
রাখতে হবে।
এনামুলকে প্রমান করতে হবে, টেকনিকের কিছুটা
দুর্বলতা নিয়েও তিনি বেজায় রান করেত পারেন। শচীন টেন্ডুলকার বোটম হ্যান্ড গ্রিপ
নিয়েও বিশ্ব জয় করেছিলেন, শেওয়াগের কি ডিফেন্স এবং ফুটওয়ার্ক কি খুব ভালো
ছিলো? কিন্তু
তারপরও বোলারদের ঘুম হারাম করে দিতেন।
টেকনিক্যালি কিছুটা দুর্বল ব্যাটসম্যানদের কিছু এসেট থাকে। শেওয়াগ
এবং জয়সুরিয়ার খুব দ্রুত লেন্থ পিক করার অসাধারন ক্ষমতা ছিলো, মিয়াদাদের ছিলো
খুব দ্রুত ক্রিজে ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তন করার ক্ষমতা, সৌরভ গাঙ্গুলি শর্টপিচ বল এবং
অনসাইডে ততটা দক্ষ না হয়েও বড়, বড় স্কোর করেছিলেন অফসাইডে স্ট্রোক খেলার অসাধারন
দক্ষতা এবং টাইমিইং-এর ওপর ভর করে এবং হালের স্টিভ স্মিথ একদম আনঅর্থোডক্স টেকনিক
নিয়েও রান করে যাচ্ছেন তার ব্যাক ফুট স্ট্রোক প্লের ওপর অসাধারন দক্ষতার জন্য।
আমাদের বিজয়ের দুটো এসেট আছে – খুব দ্রুত
বোলারদের লেন্থ পিক করার ক্ষমতা এবং অসাধারন টাইমিং। এই দুটো ব্যাপারকে আরও
শক্তিশালী করলে ভালো হয় না?
বিজয়কে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করাটা
তার জন্য এখন অবশ্য কর্তব্য।
ক্রিকেটের লঙ্গার-ভারসন ফরমেটে বিজয় অনেক কার্যকরী
একজন ব্যাটসম্যান হতে পারবেন বলে আশা রাখি।
বিজয়ের মতো প্রতিভা হারিয়ে যাক এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের কোন ভক্তেরই
কাম্য নয়।
ধন্যবাদ
ফয়সাল সিজার
No comments:
Post a Comment