Tuesday, March 22, 2016

বুমরার বোলিং নিয়ে কিছু কথা


গতরাতে ভারতের ক্রিকেট লেখক যাকে আমি খুবই সম্মান করি, অভিষেক মুখার্জি, তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ক্রিকেট কান্ট্রিতে একটি আর্টিকেল ( Taskin Ahmed: Why his bowling action is illegal and ICC is right in banning him) লিখেন। সেই আর্টিকেলে উনি বিভিন্ন ছবি দিয়ে বুঝিয়ে দেন আইসিসি কেন তাসকিনের বোলিং অ্যাকশনকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। উনার যুক্তি অকাট্য। আমি উনার যুক্তি মেনে নিয়েছি কিন্তু পলাটা প্রশ্ন করেছিলাম এই বলে, যদি কারো বোলিং কে অবৈধ ঘোষণা করার নিয়ম এরকম হয় (যেটা আইসিসির নির্দেশাবলীতে রয়েছে) তাহলে বিশ্ব ক্রিকেটে কিছু বোলার আছেন যাদের বোলিং অ্যাকশনকে সয়ারসরি অবৈধ ঘোষণা না করলেও আইসিসির ল্যাব টেস্টে পাঠানো যেতে পারে।   অভিষেক দা এবং আমার কথোপকথন

আভিষেক দা আমাকে উদাহরণ দিতে বলেছিলেন এবং আমি বুমরার বোলিং অ্যাকশনের ব্যাপারে আমার সন্দেহ প্রকাশ করেছিলাম। আমি অভিষেক দাকে বুমরার বোলিং অ্যাকশনের কিছু স্ক্রিন শট দেই এবং ক্রিকেটসকার গ্রুপে আমাদের মধ্যে একটি একাডেমিক ডিসকাশন হয়। আমাদের ডিসকাশন ছিলো পুরো টেকনিক্যাল এবং লজিকাল। আমি আশা করেছিলাম আমাদের বাংলাদেশ থেকে আমি এবং তনয় দা ছাড়া অন্যরা কথা বলবেন। আফসোস, গতরাতে কেউ কিছুই বলেনি।      

একজন বোলারের বোলিং অ্যাকশনকে কখন সন্দেহ করা হয়? আইসিসির নির্দেশনাকে খণ্ডন করলে দেখা যায়ঃ ১। বল ডিলেভারি করার সময় বোলিং arm কাঁধ বরাবর আসার পর (কাঁধকে ক্রশ করার পর নয় কিন্তু)  যদি কুনই বেঁকে যায় এবং ২। ডেলিভারি পয়েন্টতে যদি কুনই সোজা থাকে তাহলে ঠিক তখনই একজন বোলার বোলিং অ্যাকশনকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা হয়।

খালি চোখে কখনই তাসকিনের বোলিং-এ এই সূক্ষ্ম ব্যাপারটি ধরা পড়বে না। একজন সুদক্ষ কোচ এবং আম্পায়রের চোখে এটি ধরা পড়বে কারন উনারা এটা নিয়ে অনেক চর্চা করেন।

গত সপ্তাহে আমাদের দেশের কোচরা বলেছিলেন উনারা অনেক আগে থেকেই তাসকিনের বোলিং অ্যাকশনে কিছু সমস্যা ধরতে পেরেছিলেন কিন্তু আমার প্রশ্নটা হলো, উনারা তখন জাতীয় এবং বোলিং কোচকে কিছু বলেননি কেন? এই প্রশ্নের উত্তরটা কেউ যদি জানেন তাহলে আমাকে বলবেন। আমাদের জাতীয় এবং বোলিং কোচকে যদি সমালোচনা করা হয় তাহলে উনারা কি সমালোচনার বাইরে থাকবেন?

এই নিয়ম অনুযায়ী আমি মেনেই নিলাম তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ এবং এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সাথে ম্যাচেও তাসকিনের এই সমস্যাটা গতরাতে আমার চোখে এসেছে। হ্যাঁ, গতরাতে কারন আমি এশিয়াকাপ ফলো করিনি এবং অনেকক্ষণ বসে, বসে স্লো-মো মোড ক্রিয়েট করার পর ওটা চোখে এসেছে। তাও সহজে চোখে ধরা পড়ে না। ব্যাটার বোলিং arm খুবই ফাস্ট। ব্যাপারতা খুবই সূক্ষ্ম। এত সহজে চোখে ধরা দিবে না। তাসকিনের ব্যাপারে আমি এতটা আতি-আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে ওর কোন ভুল মেনেই নিতে পারছিলাম না। কিন্তু যুক্তি তো আবেগ মানে না।    

আইসিসির ম্যাচ রেফারী কিংবা আমাদের বিশেষজ্ঞগন আগে থেকেই কেন স্ক্যানারের আন্ডারে আনেননি কিংবা ওকে ওর ভুল গুলো শুধরাতে সাহায্য করেননি ? একটি মাল্টি ন্যাশনাল টুর্নামেন্ট চলার মাঝাখানে কোন বোলারকে নিষিদ্ধ হওয়াটা মেনে নেওয়া কষ্টকর।      



 যাই হোক, আইসিসির  চাকিং-এর নিয়ম অনুযায়ী বুমরার বোলিং অ্যাকশন কিন্তু সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। আমার নেওয়া স্ক্রিন শটে দেখা যাচ্ছে, যে কাঁধ বরাবর বুমরার বোলিং arm সোজা থাকে এবং কুনই না বাঁকলেও ডিলেভারি পয়েন্টে কিন্তু কুনই সোজা থাকে যেটা বোলিং অ্যাকশনকে সন্দেহের রাডারের মধ্যে নিয়ে আসে।  তাহলে বুমরাকে কেন ল্যাব টেস্ট দিতে হবে না? মানলাম ব্যাপারটা ফিফটি-ফিফটি কিন্তু টেস্ট দিতে সমস্যা তো নেই?     




একারনেই আমি Random টেস্টের পক্ষে। আই সি সির জন্য এই কাজটি কঠিন হবে না কারন তাদের অর্থকড়ি ভালোই আছে। এবং টেস্ট সেন্টার শুধু দুই-একটি জায়গায় নয়, আরও কয়েক জায়গায় স্থাপন করলে ভালো হয়। Random টেস্ট করলে Conspiracy Theory নামক ব্যাপারটি আর থাকবে না।

ধন্যবাদ

ফয়সাল সিজার 

No comments:

Post a Comment