Wednesday, November 15, 2017

টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখতে বিসিসিআইকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে


ভারত এবং শ্রীলংকার মধ্যে ইদানিং অতিরিক্ত পরিমানে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হচ্ছে। এই তো সেদিনই ভারত শ্রীলংকার মাটিতে খেলে আসলো। এখন, শ্রীলংকা আবারও ভারত সফর করছে কাল থেকে প্রথম টেস্ট শুরু হতে যাচ্ছে। ২০১৫ তে এই দুই দেশ একবার সিরিজ খেলেই ফেলেছে। ২০১৬ তে ভারত শ্রীলংকার মাটিতে তিনটি টি২০ খেলেছে। আবার ২০১৭ তে এসে তারা পূর্ণ সিরিজ খেলছে এবং ২০১৮ সালে ভারত শ্রীলংকাতে আবারও স্বাধীনতা দিবস টি২০ টুর্নামেন্টে অংশ নেবে।  

একই দলের সাথে বারবার খেলাটা খুবই একঘেয়েমি একটি ব্যাপারআর বর্তমানে শ্রীলংকা টিমের যা অবস্থা তাতে এই সিরিজে কোন জমজমাট লড়াইের সম্ভাবনা দেখছি না।

অনেকেই মতামত দিচ্ছেন, দুর্বল দলের সাথে বেশী, বেশী ম্যাচ খেলে ভারত তাদের রেটিং পয়েন্ট বাড়াচ্ছে তবে আমার কাছে এসব ধরানা অগ্রহন যোগ্য কারন, আগামী বছরই ভারত দুটো শক্তিশালী দেশ সফর করবে। রেটিংস পয়েন্ট যতই বাড়াক, ওখানে পারফর্ম না করলে যে লাভ নেই সেটা বিরাট কোহেলি খুব ভালো করেই জানেন

***

তাহলে এসব সিরিজ কেন আয়োজন করা হয়? এই বিষয়ে আমার নিজস্ব কিছু মতামত আছে।

সেই ডালমিয়া সাহেবের আমল থেকেই দেখছি, বিসিসিআই দুর্বল বোর্ড গুলোকে খুব সাহায্য করে আসছে। তাদেরকে আর্থিক সহায়াতা দিতে বিসিসিআই হয় তাদের দেশে গিয়ে খেলে এসেছে কিংবা তাদেরকে নিজেরদের দেশে খেলতে আমন্ত্রন জানিয়েছে। ভারত যেখানেই খেলুক, তারা রেভিনিউ জেনারেট করে এবং এটা কিভাবে করতে হয় সেটা ডালমিয়া সাহেব দেখিয়ে দিয়ে গেছেন।

এসব ম্যাচ থেকে যে অর্থ উপার্জন হয় তার সবটাই ভারত হজম করে না। এসব অর্থের অনেকটা অংশ শ্রীলংকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ন্যায় অর্থনৈতিক ভাবে কম শক্তিশালী বোর্ড গুলো পায়।

ভারত এসব বোর্ডদের নানা ভাবেই সাহায্য করে আসছে কিন্তু এতে কিছু লাভ হচ্ছে বলে মনে হয় না। কারন এসব বোর্ডকে আর্থিক সহায়তা দিলেও এরা দেউইলিয়াই থেকে যাবে। শুমাতিপালাদের থেকে কি আর আশা করা যায়। সে হিসেবে এসব একঘেয়েমি সিরিজ আয়োজন করে কি হবে? কিছুই হবে না। উল্টো, টেস্ট ক্রিকেটের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। 




বর্তমানে, বিসিসিআই বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করছে। বিসিসিআইয়ের অনেক কাজই আমার পছন্দ নয় এবং সমালোচনা করি তবে ডালমিয়া সাহেব আজ থেকে প্রায় দুই যুগ পূর্বে যে মডেল তৈরি করেছিলেন সেটার প্রশংসা না করে পারা যায় না। অনেক ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের রেভেনিউ শেয়ারিং-এর সুবিধা ভোগ করেছে এবং এখনও করছে। বিসিসিআই এবং ডালমিয়ার বদৌলতে অনেকে জাতে উঠেছেন এবং জাতে উঠার পর দেশপ্রেমিক ও সেজেছেন।

***              

বিসিসিআই ইজ দ্যা বস এবং তাই, টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখতে ভারতকে অনেকাংশে এগিয়ে আসতে হবে। আর তাই এই ধরনের একঘেয়েমি সিরিজ গুলোর আয়োজন একটু কমিয়ে একটি গঠনমূলক রোটেশন পলিসিতে আসলে ভালো হয় বারবার এসব সিরিজের আয়োজন টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ভালো নয়। দর্শক এখনও টেস্ট ক্রিকেটকে পছন্দ করে এবং আমি মানতেই রাজি না যে ভারতে কেউ টেস্ট ক্রিকেট ফলো করে না এবং টেস্ট ক্রিকেট ভারত থেকে হারিয়ে যাবার পথে বরং এটা মনে করি, কার্যকর ব্র্যান্ডিং এবং একঘেয়েমি সিরিজ গুলোর আয়োজন থেকে দূরে থাকলে টেস্ট ক্রিকেট এই ভারতেই সঞ্জয় মাঞ্জেকারদের মুখে চুনকালি মাখিয়ে দেবে।           

অবশ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়ে গেলে এরকম একঘেয়েমি সিরিজ আর দেখা যাবে না বলেই আশা করছি। তবে সবার পূর্বে, এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অফ টেস্ট ক্রিকেট ধরানাটির সফলতা অর্জন করতে হবে। এখানেও বিসিসইআইকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।

ধন্যবাদ 
ফয়সাল সিজার 


No comments:

Post a Comment