Sunday, September 10, 2017

মুশফিকুর রহিম বনাম নাজমুল হাসানঃ বাংলাদেশের মিডিয়াকে আরো বেশী দায়িত্বশীল হতে হবে


গতকাল সারাদিন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং সোশ্যাল মিডিয়া মুশফিকুর রাহিমকে নিয়ে নাজমুল হাসানের মন্তব্য নিয়ে বেশ গরম ছিলো। “একটা কথা বলে রাখি, সমস্যাটা মুশফিকের। মাশরাফি অধিনায়কত্ব করে না? ও কখনো এমন সমস্যায় পড়েনি। সাকিবকে টি-টোয়েন্টিতে দেওয়া হয়েছে, সে কখনো এমন সমস্যায় পড়বে না, লিখে দিতে পারি”গুলশানে নিজের বাসায় টিভি সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই মুশফিকুর রহিমের অধিনায়কত্ব নিয়ে পরশু মন্তব্য করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।    

কিন্তু বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির এক অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতির দাবি, তিনি মুশফিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে কিছু বলেননি। বরং তাঁর বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে নাজমুল বলেন, ‘কাল রাতে একটা চ্যানেলের স্ক্রলে বড় করে এসেছে মুশফিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে অসন্তুষ্ট বিসিবি সভাপতি”! আরে আমি ওর অধিনায়কত্ব নিয়ে কখন কথা বললাম? অধিনায়কত্ব নিয়ে তো কথাই বলিনি। আরেকটা চ্যানেল সকাল পর্যন্ত দিয়ে যাচ্ছে মাশরাফি-সাকিবের মতো প্রতিবাদ করতে জানে না মুশফিক, শুধু অন্যের ওপর দোষ চাপাতেই পটু! আমি কখন বললাম এসব কথা”?

বিসিবি সভাপতির মন্তব্য দিয়ে যে খবর প্রকাশ হয়েছে তাতে মুশফিক কতটা মানসিকভাবে ধাক্কা খেয়েছেন সেটিও বললেন নাজমুল, “মুশফিকের কথা চিন্তা করেন। ওর মধ্যে দিয়ে কী যাচ্ছে? বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক (টেস্ট)। তিন-তিনটা সিরিজ (টেস্ট) আমরা ড্র করলাম ওর অধিনায়কত্বে। তা-ও আবার ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ও যদি শোনে ওর অধিনায়কত্ব আমার পছন্দ হচ্ছে না, সে অন্যের ওপর দোষ চাপাতে পটু! বিসিবি সভাপতি হিসেবে এ কথা কি বলা উচিত? আমি বলতে পারি? ও আমাকে ফোন করার সাহস পাচ্ছে না। বিভিন্ন লোককে ফোন করছে। সবাই আমাকে বলছে, ও তো অস্থির হয়ে গেছে! ভাগ্যিস আমার কাছে রেকর্ড ছিল। তাকে বললাম, তোমার সম্পর্কে আমি এসব বলিনি

কাল সংবাদমাধ্যমকে ঠিক কী বলেছিলেন সেটিও বললেন নাজমুল, “সেরা একাদশে কে কখন নামবে, এখানে অধিনায়কের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অন্য আমরা যারা আছি তারা শুধু পরামর্শ দিতে পারি। শুনবে কি শুনবে না, সেটা অধিনায়কের সিদ্ধান্ত। এখানে কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। এখন তো ড্রেসিংরুমে ঢুকতেও পারি না। খবর পাঠানো ছাড়া কিছু করার নেই। আমি বলেছি, এটা হতেই পারে না। মনে হয় না সে এভাবে বুঝিয়েছে, যদি বলেও থাকে। মাশরাফি-সাকিব একজন ওয়ানডে অধিনায়ক, আরেকজন টি-টোয়েন্টির। ওদের তো কখনো সমস্যা হয় না। তারপরও ও যদি এ কথা বলে থাকে সমস্যাটা ওর মাঝে আছে। এই ছিল আমার কথা

কিছুই বুঝলাম না।

আসলে কে সঠিক?


পত্রিকাতে নাজমুল হাসানের বক্তব্য পড়ে আমি নিজেই আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলামসরাসরি এরকম কিছু তো নাজমুল হাসানের বলার কথাই না। তাহলে মিডিয়া কি আবারও আবেগ নিয়ে খেলার একটা প্ল্যান করেছিলো? চাণ্ডিকা এবং পাপনকে কি সবার কাছে হেয় করার উদ্দেশ্য ছিলো তাদের? আমি জানি, মিডিয়া অনেক সময় বক্তব্য টুইস্ট করে তবে আমাদের দেশে এটা খুব বেশী, বেশী হয়। এরকমটা না হলে ভালো হয়। একজন ক্রিকেট ফলোয়ার হিসেবে শতভাগ না হলেও অন্তত ম্যাক্সিমাম সুস্থ ধারার কাজ স্পোর্টস রিপোর্টারদের কাছে আশা করি এবং এই বিশ্বাস রাখি যে উনারা সেই কাজটি করতে পারবেন। ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ সবারই  থাকেকিন্তু কাজের ক্ষেত্রে সেটা না নিয়ে আসলে কাজ অনেক ভালো হয়।          

ধন্যবাদ 
ফয়সাল সিজার 

No comments:

Post a Comment