অস্ট্রেলিয়ার সাথে ঘোষিত টেস্ট দলে মমিনুলের নাম না দেখে আমার চেয়ে
দুঃখ কেউ পায়নি। কারন চার বছর আগে, শ্রীলংকার সাথে টেস্ট সিরিজ চলার সময়,
বাংলাদেশের
ফ্যান এবং মিডিয়া যখন মোহাম্মদ আশরাফুল নিয়ে খুবই ব্যস্ত ছিলো, তখন আমি, মমিনুল,
যিনি
বাংলাদেশ ক্রিকেট মহলে আলোচিত কোন নাম ছিলেন না, নিয়ে একটি
আর্টিকেল লিখেছিলাম Mominul Haque - Bold and impressive!। মমিনুলের হাফ সেঞ্চুরিটি শুধু একটি হাফ
সেঞ্চুরি ছিলো না, টেকনিক এবং টেম্পারমেন্টের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে ওটা খুবই উঁচু মানের
একটি ইনিংস ছিলো।
আশরাফুলের প্রশংসার বন্যায় মমিনুল হারিয়ে যায় কিন্তু করেক মাস পর
সফররত নিউজিল্যান্ডের সাথেই মমিনুল বুঝিয়ে দেয় সে কোন মানের ব্যাটসম্যান এবং উনার
ব্যাপারে আমার মতামত ভুল ছিলো না।
কিন্তু সব ক্রিকেটারের যেমন একটি লীন-প্যাচ/খারাপ সময় আসে, মমিনুল ও তেমন
একটি লীন-প্যাচের শিকার হয়েছেন। মমিনুল একজন টেস্ট ব্যাটসম্যান কারন ৫০ ওভারের
ম্যাচে ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তিনি তেমন কিছু প্রমান করতে পারেননি। কিন্তু
টেস্ট ক্রিকেটেও তিনি তার ফর্ম হারাতে শুরু করেন ২০১৫ সাল থেকে।
২০১৪ সালে তার ব্যাটিং এভারেজ ছিলো ৫১.১৭ কিন্তু ২০১৫ সালে এসেই তার
এভারেজ নিচের দিকে পড়তে থাকে। ২০১৫ সালে তিনি পাঁচটি টেস্ট খেলেছিলেন যেখানে তার
এভারেজ ছিলো ৩৬.৮৬। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ মাত্র দুটি টেস্ট খেলেছিলো যেখানে তার
এভারেজ ছিলো ২৩.৫০ এবং ২০১৭ সালে তিনটি টেস্ট খেলে তার ব্যাটিং এভারেজ হয়েছে
২৩.০০।
উপরের পরিসংখ্যান বলছে মমিনুলের ফর্ম নেই। এখন যে ব্যাটসম্যানের ফর্ম
নেই তাঁকে যদি দলে না নেওয়া হয় তাহলে সেটা কি যৌক্তিক না অযৌক্তিক? কারও ফর্ম ভালো
না হলে তাঁকে ড্রপ করা হয় যেন সে তার টেকনিকের উপর আরও বেশী কাজ করার সুযোগ পায়।
এটা কোন ষড়যন্ত্র না।
অ্যালেন বোর্ডার কিংবা ভিভিএস লক্ষনের ন্যায় ব্যাটসম্যান ও খারাপ
ফর্মের জন্য দল থেকে বাদ পড়েছিলেন এবং তারা ঘরোয়া ক্রিকেট এবং অ্যাকাডেমিতে
নিজেদের ভুল গুলো স্টাডি করে আবার ফিরে এসেছেন।
ক্রিকেট কিংবা ফুটবল যেই স্পোর্টসের কথাই বলুন না কেন, এগুলো এত সহজ
না। এখানে স্টাডি ম্যাটার করে। এবং এসব ব্যাপারে মতামত দেবার পূর্বে খেলাটা
সম্পর্কে ভালোভাবে স্টাডি করা উচিৎ এবং আপডেটেড থাকা উচিৎ।
বোকার মতো অনালাইন পত্রিকা এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে কোচের উপর নিজের
ব্যক্তিগত রোষ চরিতার্থ করার জন্য কোন কিছু না বুঝে কথা বলা লোকদের উপর আমার করুনা
হয়। দেশটা বাংলাদেশ বলে কিছু লোক সাংবাদিক এবং ক্রিকেট নিয়ে কথা বলতে পারে।
মমিনুলকে সময় দিতে হবে। সে ফিরে আসবে কিন্তু তাকে সময় দিতে হবে। এখন
চট্টগ্রাম টেস্টে সে পারফর্ম করতে পারলে তার আত্মবিশ্বাস কোথায় যাবে? তার টেকনিক্যাল সমস্যা নিয়ে কোন অনলাইন পত্রিকা কি কথা বলবে?
আমি আবারও বলছি, ক্রিকেটে আবেগ খাঁটে না।
ধন্যবাদ
ফয়সাল সিজার
No comments:
Post a Comment