গ্রামে ইলেকশন হবে এবং সেটা নিয়ে মুন্সি সাহেবের রাতের ঘুম হারাম। মুন্সি সাহেব ইলেকশনের একজন ক্যান্ডিডেট। উনি ইলেকশনে জিততে চান। উনার লোকবল এবং অর্থবল দুটোই ভালো। কিন্তু সরাসরি এই দুটোর প্রয়োগ করলে একটু দৃষ্টিকটু দেখায়। উনি বীরের বেশে ইলেকশনে জিততে চান। আর সেজন্য চাই পাবলিকের সিম্পেথি।
পাবলিক সিম্পেথি না থাকলে হবে না। উনি দিনরাত চিন্তা করতে থাকেলন। ভাবতে থাকলেন কিভাবে পাবলিকের আবেগকে কাজে লাগান যায়।
অনেক চিন্তা করে তিনি একটি প্ল্যান বের করলেন।
নিজেরই বিশ্বস্ত লোকদের মধ্য থেকেই কিছু দুষ্টু লোক বানালেন। সেই দুষ্টু লোক গুলো আবার গ্রামের নীতিনির্ধারনের কাজে নিয়োজিত আছেন। তারা এমন কিছু আইন তৈরি করলেন যার জন্য গ্রামের সাধারন মানুষদের অনেক ভোগান্তি হবার সম্ভাবনা আছে।
শি লোকেরা আইন তৈরি করে পেশ করার সাথেসাথেই মুন্সি সাহেব সিংহের মতো গর্জন দিয়ে উঠলেন। উনি সেই আইনের বিরুদ্ধে মানব বন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ এবং আরও অনেক কিছুই করলেন। তার প্রতিবাদী এবং আবেগি কণ্ঠে গ্রামের লোকজন বিগলিত হয়ে গেল। গ্রামের মানুষদের কাছে মুন্সি সাহেব এখন একজন সিংহ।
গ্রামে ইলেকশন হলো। মুন্সি সাহেব বীর দর্পে ইলেকশনে জয়ী হলেন।
এখন গ্রামে তিনি অবসংবাদিত হিরো!
এত প্রতিবাদ, এত মানব বন্ধন এবং ইলেকশনের ক্যাচালের মধ্যে সেই নতুন আইনের কথা মানুষ ভুলেই গেলো।
সেই আইন তো বাতিল হলো না।
অনেকদিন পর আবার সেই আইনের তাপ গ্রামের মানুষ পেতে শুরু করলো।
মুন্সি সাহেব আবারও একটি হুংকার দিলেন, প্রতিবাদ সমাবেশ করলেন, মানব বন্ধন করলেন এবং আবেগের বানী শুনালেন।
গ্রামের লোকজন গলে গেলো।
মুন্সি সাহেব আবারও সিংহ পুরুষ!
কিন্তু আইন বাতিল হলো না।
দিন শেষে মুন্সি সাহেব তার নিজের তৈরিকৃত লোকদের এবং চামচাদের নিয়ে হাসি ঠাট্টার ছলে বলতে থাকেন, “এসব বেকুব না থাকলে আমি নেতা হতেই পারতাম না!"
ধন্যবাদ
ফায়সাল সিজার
No comments:
Post a Comment