Thursday, November 12, 2015

যে রেজাল্ট খারাপ করে সে কি বড় কোন অপরাধী?




এই দেশে কেউ একটু মেডিওকোর কিংবা কম-কম পারে এমন স্টুডেন্ট হলেই তাকে পরিবার এবং স্কুল-কলেজ গুলোতে খুবই নিম্ন শ্রেণীর  মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং উৎসাহ দেবার বদলে সেই স্টুডেন্টটির সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করা হয়।  স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে এই ধরনের আচরন করার প্রবনতা খুব বেশী দেখা যায়।

একজন শিক্ষকের আসল কৃতিত্ব তখনই যখন সে এই ধরনের মেডিওকোর এবং কম-কম পারে স্টুডেন্টদের দিয়ে ভালো ফলাফল করাতে পারে। আমি এখন পর্যন্ত এমন কোন ক্যারিসমেটিক শিক্ষক পাইনি এবং দেখিনি যে কিনা এই ধরনের স্টুডেন্টদের পেছনে সময় দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে। 

কোন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্টের ভালো রেজাল্ট করার পেছনে একজন শিক্ষকের কোন কৃতিত্ব আছে বলে আমি মনে করি না। যে ব্রিলিয়ান্ট সে ভালো রেজালট করবেই। তাদের জন্য একটু গাইডলানই যথেষ্ট। কিন্তু শিক্ষকদের উৎসাহ এবং গাইডলান সেসব মেডিওকোর এবং কম-কম পারে স্টুডেন্টদের বেশী দরকার যারা উপেক্ষিত। 

দুঃখজনক হলে ও সত্যি যে আমাদের দেশের শিক্ষকগণ গাইডলান কিংবা উৎসাহ তো দূরের কথা, এদের দিকে ফিরেও তাকায় না। বরঞ্চ এদের সাথে উনাদের আচরণ খুবই অপমানজনক হয়। শিক্ষক মহাশয় যখন দাম দিচ্ছে না তখন ক্লাসের বাকি সটুডেন্টরা এদেরকে দাম কেন দিবে

অপমানিত এবং উপেক্ষিত হয়ে এসব স্টুডেন্টরা নিজেদের মধ্যে পড়ালেখা করার উৎসাহ খুঁজে পায় না বরঞ্ছ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।

এদের আরও বড় সর্বনাশটা করে পরিবারের লোকজন এবং আত্মীয়স্বজনেরা। স্কুল-কলেজ থেকে অপমানকর সময় অতিবাহিত করে এরা ঘরে ফিরে যখন বাবা-মা এর নিকট থেকে আরও বেশী অপমানজনক আচরন পায় তখন এরা হতাশার গভীর সাগরে আরও বেশী নিমজ্জিত হতে থাকে এবং সর্বোপরি, আত্মীয়স্বজদের কটূক্তি এদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তোলে।  

এদের মধ্যে কেউ, কেউ খারাপ পথে চলে যায়। কেউ, কেউ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয় এবং অনেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। খুব কম সংখ্যক মেডিওকোর এবং কম-কম পারে এমন স্টুডেন্টরা ফাইট করে সামনে আগায়। এদের সংখ্যা অনেক কম। 

রেজাল্ট খারাপ হলেই কি আপনার ছেলে কিংবা মেয়ে কিংবা সেই মেডিওকোর স্টুডেন্ট কি বড় কোন অপরাধী?  হাতের পাঁচ আঙ্গুল কি সমান? একটি ক্লাসে সবাই কি ফার্স্ট হয়? যে একটু দুর্বল তার কি উৎসাহ না উপেক্ষা, কোনটি পাওয়া উচিৎ? আপনার রূঢ় আচরন কি ভালো কোন ফল নিয়ে আসছে? অনেক গুলো মৃত্যু এবং জীবন নষ্টের জন্য কিন্তু আপনরাই দায়ী।

উৎসাহ দিতে কিংবা বন্ধুত্ব পূর্ণ আচরন করতে পয়সা লাগে না। একটু দিলে তো ক্ষতি নাই।

ধন্যবাদ
ফয়সাল সিজার

No comments:

Post a Comment