Thursday, May 4, 2017

কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের শারীরিকভাবে হেনস্থা চলছেই


ডাঃ প্রনয় রুদ্র। সিলেট মেডিকেল কলেজের ৪৩ তম ব্যাচের ছাত্র। তার ব্যাচের বন্ধুদের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, গত বুধবার রাত ১০.৩০ টায় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত অবস্থায়, নাজিরপাড়া এলাকার কতিপয় সন্ত্রাসী নিয়ম ভঙ্গ করে ভিতরে ঢুকে ডাঃ প্রনয় রুদ্রকে চিকিৎসা প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। ব্যক্তিগত কারনে ডাঃ প্রনয় রুদ্র চিকিৎসা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করলে সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধোর করে। এতে তিনি যখম হন। পরে হাসপাতালের কর্মচারীদের প্রতিরোধের মুখে ডাঃ প্রনয় রুদ্র প্রাণে রক্ষা পান।

আবারও একজন চিকিৎসক রোগীর অ্যাটেনডেন্ট দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হলেন। কর্মরত অবস্থায় চিকিৎসকদের মার খাওয়াটা এখন যেন একটা নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে। গতরাতে বিএসএমএমইউ-এর কেবিন ব্লকের আইসিইউতে ও এরকম ঘটনা ঘটেছে।

চিকিৎসকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিয়ে অনেক আন্দোলন, মানবন্ধন, ধর্মঘট পালন এবং কালো ব্যাজ ধারন হয়েছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। একজন চিকিৎসক প্রতিদিন এভাবে নির্যাতনের শিকার হতেন না যদি পূর্বের আন্দোলনের উত্তাপ নিমিষেই না শীতল হয়ে যেত।

চিকিৎসকদের আন্দোলন গুলো যখনই একটি দূর্বার আন্দোলনে রূপ নিতে থাকে, তখনই এই আন্দোলনের উত্তাপ কমাতে, সাধারন চিকিৎসকদের মধ্যে নেতারা ঢুঁকে পড়েন এবং কূট কৌশলের সাথে এদের মুরিদদের নিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়ে ফেলে সেটিকে নস্যাৎ করে দেন।

২০১৪ সালের বারডেম হাসপাতালে ঘটে যাওয়া বর্বর ঘটনার পর কি চিকিৎসকদের ওপর নির্যাতন কমেছে? একটু ও না। কারন কোন আন্দোলনই সফলতার মুখ দেখেনি কারন এসব নেতারা ভেতরে ঢুঁকে ঠুনকো আশ্বাস এবং কমিটি, সাব-কমিটির নামে সবকিছুর ডিভিশন করে দেন এবং এই আশ্বাস-এবং-কমিটির ককটেল এতই শক্তিশালী যে সেটা আন্দোলনকে ব্যর্থ করে দিয়েছে, দিচ্ছে এবং দিবে।

যারা আমাদের চিকিৎসক সমাজকে সর্বদা হেয় করে আসছেন তাদের সাথে যারা উঠাবসা করেন এবং হাত মেলান, তারা আর যাই হোক চিকিৎসক সমাজের জন্য কল্যাণকর হতেই পারেন না। এসব নেতারা ভবিষ্যতে সংসদে বসতে চান আর তাই তো কিছু কোমলমতি ছেলেমেয়েদের আবেগকে পুঁজি করে এবং তাদের ওপর করা শারীরিক নির্যাতনকে নিয়ে রাজনীতি করে উনারা মন্ত্রী-এমপি হতে চান।

একজন চিকিৎসক মার খেলেই তো তাদের সুবিধা। নোংরা রাজনীতি করার একটা ভালো গ্রাউন্ড পেয়ে যাবেন।

ডাঃ প্রনয়। নেতারা তোমাকে দেখতে আসবেন। কিছু ছবি তোলা হবে। তোমাকে একটি পোস্ট দেওয়া হবে এবং তুমি চুপ মেরে যাবে এবং এই খেলা চলতে থাকবে।


একটি কথা আমরা ভুলে যাই। পেছনে বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার ছবি থাকলেই কেউ কিন্তু নেতা হয়ে যায় না। হ্যাঁ, সভাপতি হওয়া যায়। কিন্তু নেতা না।

নেতা ব্যাপারটা খুবই ইউনিক। এটার মধ্যে একটা নিজস্ব স্বকীয়তা থাকতে হয়। আর তাই তো বঙ্গবন্ধু অবিভক্ত পাকিস্তান আমলেও কোন সভা সমাবেশে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছবি নিজের আশেপাশে রখেছেন বলে মনে হয় না।

ধন্যবাদ

ফয়সাল সিজার 

No comments:

Post a Comment