আমি মেডিসিন ভালো বুঝি কিন্তু আমার নামের পাশে যদি এমডি কিংবা এম,আর,সি,পি না থাকে এবং
ডিগ্রী অর্জন করে কোন রোগের চিকিৎসা ভালোভাবে না দিতে পারলে আমার কোন বেল নাই। আমি
নিজেই নিজেকে যোগ্য ভাবতে পারব না যদি না আমার কোন ডিগ্রী না থাকে এবং কঠিন
চ্যালেঞ্জ গুলো ফেস করে তার সমাধান না করতে পারি।
একজন ডাক্তার যত কিছুই করুক না কেন, ডিগ্রী না থাকলে তার দাম নেই।
তার মনে রাখা উচিৎ,, দিন শেষে সবাই প্রফেসর এবি এম আব্দুল্লাহ, প্রফেসর সাইদ আতিকুল হক,
প্রফেসর আজিজুল কাহার, প্রফেসর কনক কান্তি বড়ুয়া কিংবা প্রফেসর খাদিম স্যারদের কাছেই চিকিৎসা নিতে যাবেন।
আমার যোগ্যতা কতটুকু সেটা এমডি কিংবা এম, আর, সি, পি নির্ধারণ
করবে। আজাইরা লাফালাফি এবং বিএসএমএমইউ-এর চাকরি নয়।
ঠিক
সেরকমই, ফুটবলে সর্বকালের সেরা বিবেচিত হতে হলে বিশ্বকাপ জিততে হবে। সেটা না পারলে
ঐ কাতারে জোর করে কাওকে বসানো যায় না। ইতালির রবার্টো ব্যাজিও সেরা কিন্তু যখনই
সর্বকালের সেরার কথা উঠে আসে, তখন একজন বিশেষজ্ঞ এবং ফ্যান, যে কিনা ফুটবল ভালোভাবে
ফলো করে, তার মুখে সবার প্রথমে পাওলো রসির কথা আসবেই আসবে। কারন ১৯৮২ সালে পাওলো
রসির কীর্তি যে তাকে অমর করে দিয়েছে। কিংবা গুইসেপ মিয়েজ্জাকে অটোম্যাটক্যালি সবার
ওপরে রেকেহ দিবেন সকল ইতালিয়ান ফুটবল ফ্যান এবং বিশেষজ্ঞ। মিয়েজ্জা যে বিশ্বকাপ
ফুটবল জয়ী কিংবদন্তি।
ক্রিটিক
এবং সেন্সিবল ফ্যান; পুসকাস, ক্রুয়েফ কিংবা জর্জ বেস্টের ব্যাপারে ভালোভাবেই জ্ঞাত
কিন্তু সর্বকালের সেরার কথা আসতেই তাদেরকে ছাপিয়ে গারিঞ্চা, জিদান কিংবা ব্রাজিলের
রোনাল্ডোর কথা সবার প্রথমে মুখ অটোম্যাটক্যালি দিয়ে বের করবেন। পেলে এবং
ম্যারাডোনা তো সর্বকালের সেরাদের ও সেরা। এদের দুজনের কথা নাই বা বললাম।
আচ্ছা,
এর কারনটা কি? ক্লাব ফুটবলে ক্রুয়েফ, বেস্ট, পুসকাস কিংবা জিদানের রেকর্ড অসাধারন কিন্তু তারপরও
জিদান কিংবা গারিঞ্চার নামঅটোম্যাটক্যালি মুখে কেন আসে? পুসকাস কিংবা বেস্টের যে
বসুকাপ জেতা হয়নি। সর্বকালের সেরা হতে গেলে বিশ্বকাপ জিততে হবে। ক্লাব ফুটবলে অনেক
কিছুই করা যায় কিন্তু কে সর্বকালের সেরা সেটা বিশ্বকাপ নির্ধারণ করে।
আমি
মেসিকে এই যুগের সেরা মানি। কেন মানবো না? ক্লাব ফুটবলে তার ধারে কাছেও কেউ নেই। মেসির
সব সেরা পারফর্মেন্স ক্লাব লেভেলে। বার্সেলোনার হয়ে তার পারফর্মেন্স চোখে লাগার
মতো। কিন্তু দেশের হয়ে তার অবদানটা কি? একটা কোপা আমেরিকা দিয়ে কি বিচার করা ঠিক
হবে? তাহলে তো এঞ্জো ফ্রাঞ্চেসকোলি কিংবা রুবেন সোসা মেসির চেয়েও সেরা। আমি শুধুই
ক্লাব ফুটবল দিয়ে কাওকে সর্বকালের সেরা মানতে রাজি নই। আমার এই মতামত ক্রিস্টিয়ানো
রোনালডোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
গত
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচের পর মেসিকে কি কিছু করতে দেখা গেছে? ডি মারিয়া
দেওয়া একটি পাস জেতা দিতে প্রায় ১১৭ কি ১১৮ মিনিট লেগেছিলো। জার্মানির সাথে ফাইনালে পুরো ম্যাচেই মেসি ছিলো
নিষ্প্রভ। এমন কি ডিয়েগো ম্যারাডোনা পর্যন্ত তার খেলার সমালোচনা করেছেন। অনেকেই
বলেন, আর্জেন্টিনা দলটি সেরা নয় তাই তারা মেসিকে সাহায্য করতে পারে না। সর্বকালের
সেরা ফুটবলারের আবার সাহায্যের দরকার কি? কই, ১৯৮৬ সালে ডিয়েগো ম্যারাডোনা একটি
মাঝারি মানের দলকে একাই টেনে নিয়ে
গিয়েছিলেন ফাইনাল পর্যন্ত। সবশেষে বিশ্বকাপ ও জিতিয়েছিলেন।
আমার নামের পাশে ডিগ্রী না থাকলে যেমন আমার কোন যোগ্যতা নেই ঠিক তেমনি
একজন ফুটবলার বিশ্বকাপ না জিতলে, তাকে সর্বকালের সেরা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াটা ও
ন্যায্য বিচার নয়।
শুধু ক্লাব ফুটবল দিয়ে বিচার করলে জর্জ উয়াহ কিংবা আন্দ্রে
সেভচেঙ্কোর নামও সর্বকালের সেরাদের তালিকাতে আসতে পারে। আসলেই কি তারা পেলে,
গারিঞ্চা, ম্যারাডোনা এবং জিদনানের কাতারে আসতে সক্ষম?
You decide!!!!
কিছু ভক্তকুল যখন মেসিকে পেলে এবং ম্যারাডোনার উপরে নিয়ে যায় তখন
তদের কথা গুলো বিরক্তিকর ভাবে হাস্যকর এবং অবাস্তব লাগে। ফুটবলের ইতিহাসটা একটু
ঘেঁটে দেখ রে বাবা। শুধু বার্সেলোনা এবং আর্জেন্টিনার খেলা দেখলে কি ফুটবল বোঝা
যাবে কিংবা তথাকথিত সুশীলদের মতো মৌসুমি ভক্ত হলে হবে কি?
আরে ভাই, মেসি এখনও গারিঞ্চার ধারে কাছেও আসে নাই। পেলে
এবং ম্যারাডোনা তো অনেক দূরের জিনিস।
সর্বকালের সেরা হওয়া কি এতই সহজ?
শুভ
জন্মদিন মেসি।
ধন্যবাদ
ফয়সাল সিজার
No comments:
Post a Comment